সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর ওয়ারীর সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৭) ধ*র্ষণের পর হ*** করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয় ধর্ষক হারুন অর রশিদ।
সেখানে ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারী ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জবানবন্দিতে হারুন বলে, “আমার আপন খালাতো ভাই পারভেজের বনগ্রামের বাসায় দুই মাস ধরে থাকি। আমি খালাতো ভাইয়ের রঙের দোকানের স্টাফ।
গত ৫ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টায় খালাতো ভাইয়ের ছেলে আরাফের (১) জ্বরের ওষুধ নিয়ে আট তলায় তার বাসায় যাই। ওষুধ দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে ফ্লাটের দরজার সামনে গিয়ে দেখি ৬ষ্ঠ তলার ৬/বি ফ্ল্যাটের আব্দুস সালামের মেয়ে সায়মা এসেছে। সে মাঝে মধ্যে তার মাসহ খালাতো ভাইয়ের বাসায় আসতো এবং আরাফের সঙ্গে খেলাধুলা করতো।
আরাফ অসুস্থ থাকায় সায়মা আমাকে বলে, ‘চাচু চাচু আমাকে ছাদটা দেখিয়ে নিয়ে আসেন।’ তখন আমি ও সায়মা একসঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠি এবং তাকে ৯ তলায় একটি খালি রুমে নিয়ে যাই। রুমটি আগে থেকে খোলা ছিল। রুমে গিয়ে আমি তাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু সে চিৎকার দিয়ে ওঠে। এরপর তার নাক ও মুখ চেপে জড়িয়ে ধরি। সে আবার চিৎকার দেয়। তখন আমি তাকে বুকে নিয়ে গলা টিপে ধরি। তখন সায়মা প্রায় আধাম*রা। এই অবস্থায় তাকে ফ্লোরে শোয়াই এবং প্যান্ট খুলে ধ*র্ষণ করি। ধ*র্ষণ করার পর গলাটিপে মে*রে ফেলি। এরপর রুমে থাকা রশি দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে মৃ*** নিশ্চিত করি। কারণ সে আমাকে চেনে। সে বেঁচে থাকলে আমার কথা বলে দেবে। তার মৃ***র পর কিচেন রুমের সিংকের নিচে রেখে দেই।
এ সময় মাগরিবের নামাজের আজান দেয়। খালাতো ভাই পারভেজের বাসায় গিয়ে গোসল করে জামা-কাপড় চেঞ্জ করে বাসার নিচে চলে যাই এবং মহল্লায় হাঁটাহাঁটি করি। এরপর রাত ১১টার দিকে আমার নিজের বাড়ি কুমিল্লায় চলে যাই। যাওয়ার পথে রাস্তায় মোবাইলের সিম ফেলে দেই। বাড়িতে যাওয়ার পর ঘটনাটি মা-বাবাকে বলি। ঘটনা শুনে তারা আমাকে বকাবকি করে। আমি আমার ফুফুর বাড়িতে আশ্রয় নেই।”
অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সায়মাকে ধ*র্ষণের পর হ*** করে হারুন
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আরজুন ধর্ষক হারুনকে আদালতে হাজির করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি বলেন, আসামি হারুন অত্যন্ত জঘন্য প্রকৃতির। এ ধরনের অপরাধ কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। আসামি অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সায়মাকে ধ*র্ষণ করে শ্বাসরোধে হ*** করে। ঘটনার সঙ্গে সে সরাসরি জড়িত। আসামির বাড়ি অন্য জেলায়। জামিন পেলে চিরতরে পলাতক হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই (শুক্রবার) সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নবম তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মাকে মৃ*ত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ম*রদেহ উদ্ধার করে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই ভবনের ছয় তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো সায়মা। বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সায়মা। ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়ত সে।
আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সায়মা তার মাকে বলে, ‘আমি উপরে পাশের ফ্ল্যাটে যাচ্ছি, একটু খেলাধুলা করতে। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় সায়মা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর নবম তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে গলায় রশি দিয়ে বাঁধা ও মুখে র**াক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পাই।’
এরপর পুলিশ লা** উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে সায়মার শরীরে ধ*র্ষণের আলামত মিলেছে। ধ*র্ষণের পর তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মৃ*** নিশ্চিত করা হয়। ময়নাতদন্তে তার যৌ*নাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন, মুখে র** ও আঘাতের চিহ্ন, ঠোঁটে কাম*রের দাগ দেখা গেছে।